৩.২. কেন দরকার ব্রডব্যান্ড?

Efficiency is doing things right; effectiveness is doing the right things.

  • Peter F. Drucker

ছোটবেলা থেকে কম্পিউটার নিয়ে কাজ করার সুবাদে হাজারের বেশি প্রেজেন্টেশন তৈরি করতে হয়েছে বিভিন্ন সময়ে। ওই ডসের হার্ভার্ড গ্রাফিক্স দিয়ে শুরু হলেও এর শেষ দেখছি না এখনো। বিটিআরসিতে আসার পর চেয়ারম্যান মহোদয়ের দেশ বিদেশের বিভিন্ন প্রোগ্রামের জন্য বানাতে হয়েছে অনেক প্রেজেন্টেশন। শুরুতে আমরা দেখাতে চাইতাম কতো হাজার কোটি টাকা আয় করে দিয়েছি সরকারকে। মূলত: লাইসেন্স বিক্রি আর তাদের সাথে রেভিনিউ শেয়ারিং করে। স্পেকট্রাম বিক্রি করে তো পয়সা পাচ্ছি আলাদাভাবে। ব্যাপারটা এমন গিয়ে দাড়াল যে টাকা উপার্জন করাটাই বিটিআরসি'র অন্যতম কাজ। আমাদের অ্যানুয়াল রিপোর্টে আসতে থাকলো একই জিনিস। আগের বছর থেকে কতো বেশি আয় করতে পারছি সেটাই গল্পের বিষয়। অপারেটররা কতো হাজার কোটি টাকা জমা দিচ্ছে সরকারী কোষাগারে সেটা আসছে ফ্রন্টলাইনে। সরকারও থাকবে না বসে। টার্গেট দিয়ে দিলো বিটিআরসিকে।

চিন্তার বিষয়। বাইরের অনেক অনেক প্রেজেন্টেশন চোখে পড়লো ওই সাত বছরে। তাদের প্রেজেন্টেশনগুলো ঝলমল করছে অন্য কিছু ইনডিকেটর দিয়ে! কতো এমপ্লয়মেন্ট জেনারেট করেছে সে বছর আর কতো নতুন চাকরির ক্ষেত্র তৈরী করেছে তার খুঁটিনাটি হিসেব বের করতেই ব্যস্ত তারা। কি করলে তৈরী হবে নতুন চাকরির ক্ষেত্র আর নতুন এমপ্লয়মেন্ট – সেটা নিয়েই উল্টে পাল্টে ফেলছে নীতিমালাগুলোকে। তাদের কোন নীতিমালার ফলে প্রত্যক্ষ আর পরোক্ষ চাকুরী আর সেটার ক্ষেত্র তৈরী করতে পারছে তার হিসেব আবার সেই নতুন চাকরির ক্ষেত্র বা নতুন কোম্পানিগুলো কিভাবে দেশের জিডিপি বাড়াচ্ছে সেগুলোই আলোচনার বিষয়। অফিসের নামও পাল্টে ফেলছে তারা। বলছে না রেগুলেটরি বা নিয়ন্ত্রণ কমিশন, বলছে ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন ডেভেলপমেন্ট অথোরিটি। হ্যা, ডেভেলপমেন্ট অথোরিটি। ভুল বলেছি কি? স্ট্যাটিসটিকাল ইনডিকেটরগুলো জল এনে দেবে চোখে। শুরু করলাম স্লাইডগুলো দিয়ে। ফেলে দিলাম টাকা পয়সার হিসেব, আমাদের প্রত্যক্ষ আয়। ন্যাশনাল বোর্ড অফ রেভিনিউ তো নই আমি। বাতাস আর খাদ্যের মতো জ্ঞানেও রয়েছে সবার অধিকার। খাদ্যে ভর্তুকি দিলেও এখানে তো সেটা চাচ্ছে না কেউই।

ব্রডব্যান্ড কিভাবে এমপ্লয়মেন্ট জেনারেট করে সেটা নিয়ে স্টাডি রয়েছে হাজার খানেক। কলম্বিয়া বিজনেস স্কুলের ডকটর রাউল কাজের (katz) দুহাজার নয়ের পেপারটা হচ্ছে আমার পছন্দের – এক নম্বর। ক) ব্রডব্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার বসাতে গেলে যে প্রত্যক্ষ এমপ্লয়মেন্ট সেটাই হচ্ছে প্রথম ধাপ; মানে অপারেটরের চাকুরী করছে যারা, খ) বড় রাস্তার পাশে থাকা জনপদের যেভাবে ইকোনমিক একটিভিটি বেড়ে যায় সেভাবে ব্রডব্যান্ড সংযোগ ব্যবহার করে অনেক ধরনের অর্থনৈতিক কার্যক্রম শুরু হবে, ফলে সেই কাজকে তুলতে যেয়ে আরো অনেক চাকুরী তৈরী হবে; আমাজনের মতো বিলিয়ন ডলারের ই-কমার্স সাইট গড়ে উঠেছে এই ব্রডব্যান্ড থেকেই, বিডিজবস, এখনি আর বিক্রয়.কম কেই বা বাদ দেই কেন? গ) আর এই ব্রডব্যান্ড সংযোগ তৈরী করবে মানুষ মানুষের যোগসূত্র থেকে প্রভাবিত (ইন্ডিউসড) কার্যক্রম যার স্পিলওভার এফেক্ট হচ্ছে বিলিয়ন ডলারের বাজার, যাকে আজ আমরা বলি ফ্রিল্যান্সিং। আর আপনার কনসাল্টিং বিজনেসটাই বা বাদ যাবে কেন? বাসায় বসে টাকা আয় ব্যাপারটা নিয়ে এসেছে কিন্তু এই ব্রডব্যান্ড!

বাবার বাসায় নিচের তলায় থাকছি বছর কয়েক ধরে। শহরের সাথে যোগসুত্র রাস্তাগুলোও এই এলাকা থেকে বেশ দুরে। বড় একটা রাস্তা বাসার পাশ দিয়ে যাবার কথা শুনেছিলাম বাবার মুখেই – ছোটবেলায়। পাড়ার অনেকেই এই একশো ফুট রাস্তাটার কথাটা বলে থাকেন। বিশেষ করে বয়স্করা। সেটা সম্ভাবনা হিসেবেই রয়েছে গত দশ পনেরো বছর ধরে। আশা যে মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে সেটার উত্কৃষ্ট উদাহরণ হতে পারে এই ঘটনাটা। লাইফ এক্সপেকটেন্সি বেড়েছে বটে এই আশার কারণেই! হাইপোথেটিক্যালি ব্যাপারটাকে সত্যি বলে ধরে নেই – আজকের আলোচনার জন্য। ধরে নিন, সিটি কর্পোরেশনের প্ল্যান পাশ হয়ে গেছে গতবছর। রাস্তার উন্নতির কিছু চিহ্ন দেখাও যাচ্ছে মাঝে মধ্যে। ধারণা করুন তো কি ঘটতে পারে এলাকাতে?

প্রচুর প্রপার্টি ডেভেলপারদের আনাগোনা শুরু হয়ে যাবে এলাকায়। কাঠা প্রতি জমির দাম বেড়ে যাবে অন্ততঃ দশ থেকে বিশগুন। সুপারশপের জন্য কয়েকটা জায়গা হয়ে যাবে বুকিং কয়েকমাসের মধ্যে। নতুন স্কুল বিল্ডিংয়ের জায়গা খোঁজা হবে এখানকার অখ্যাত স্কুলগুলোর আশেপাশে। ফার্মেসী, নতুন দোকান, কেএফসির ফ্রানচাইজি আর কি কি আসবে সেটার হিসেব আর নাই বা করলাম। রাস্তা হয়নি তাতেই এ অবস্থা – রাস্তা হবার পর কি হবে সেটা সহজেই অনুমেয়। ইকোনমিক একটিভিটি কতোটুকু বাড়বে সেটার হিসেবের খুঁটিনাটি না দিতে পারলেও এলাকার মানুষের আয় যে অনেকগুন বাড়বে সেটাই মোদ্দা কথা।

আজ আমরা মোবাইলের জিপিআরএস আর আইএসপির স্বল্পগতির ইন্টারনেট সংযোগ দিয়ে যতোটুকু ইকোনমিক একটিভিটি করছি – সেখানে ব্রডব্যান্ডের একশো ফুট রাস্তা হলে কি হবে, সেটার হিসেব আমরা কি করেছি কখনো? স্বল্পোন্নত আর মধ্যম আয়ের দেশগুলোর জন্য একটা বিশ্বব্যাঙ্কের গবেষণার ফলাফল আছে মানুষের মুখে মুখে – কিয়াং আর রোসোটো মিলে যেটা করেছিলেন দুহাজার নয়ে। দশ শতাংশ ব্রডব্যান্ড পেনিট্রেশন আমাদের মতো দেশের জিডিপি বাড়ায় ১.৩৮ শতাংশের মতো। কম নয়! এটার ওপর আরো গবেষণা নিয়ে আসেন কিম, কেলি আর রাজা – দুহাজার দশে। এবার উন্নতদেশগুলোর উপর। অবাক কান্ড! এই ব্রডব্যান্ড পেনিট্রেশনের ফলাফল উন্নত দেশ থেকে স্বল্পোন্নত দেশগুলোতেই বরং বেশি। উন্নত দেশে ইনফ্রাস্ট্রাকচার আগে থেকে তৈরী থাকাতে তাদের গ্রোথ কিছুটা কম – ১.২১ শতাংশ প্রতি ক্যাপিটায়, জিডিপি গ্রোথ হিসেবে। নতুন গবেষণায় ব্রডব্যান্ডের প্রবৃদ্ধি আইসিটির অন্যান্য সেক্টর থেকে বেশ উপরে। বিটিসিএলের ল্যান্ডলাইন, মোবাইলফোন আর ইন্টারনেট থেকে ব্রডব্যান্ডের প্রবৃদ্ধিই অনেক বেশি। বুজ এণ্ড কোম্পানীর হিসেবটা একটু আলাদা। দশ শতাংশ ব্রডব্যান্ড পেনিট্রেশন ওই বছরের কাজের প্রোডাক্টিভিটি বাড়াচ্ছে ১.৫ শতাংশে - সামনের পাঁচ বছর ধরে।

মোবাইলের পেনিট্রেশন তো ফেনোমেনাল – বিশ্বব্যাপী। ৯৬ শতাংশ পৃথিবী জুড়ে, অসম্ভব তাই না? ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের সব স্ট্যাটিসটিকাল ইনডিকেটর নিয়ে কাজ করতে হয় বলে এই কয়েকটা ইন্ডিকেটর নিয়ে আসছি সামনে। বিশ্বব্যাঙ্কের রিপোর্ট পাশ কাটিয়ে চলুন আমার প্রিয় একটা কনসাল্টিং ফার্মে। ম্যানেজমেন্ট কনসাল্টিং ফার্ম ম্যাকেঞ্জির নাম শুনেননি টেলিযোগাযোগ ক্ষেত্রে এমন মানুষের সন্ধান পাওয়া দুস্কর। ওদের ধারনায় সাধারণ বাসাবাড়ির ব্রডব্যান্ড পেনিট্রেশনই দেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি করতে পারে ১.৪ শতাংশ[ম্যাকিঞ্জী এণ্ড কোম্পানীর আরেকটা স্টাডি বলছে মানুষের বাসাবাড়িতে দশ শতাংশ সংযোগ বাড়লে সেটা জিডিপি বাড়ায় ১.৪ শতাংশ পর্যন্ত।]! ইম্প্রেসিভ, তাই না?

ওইসিডি[ওইসিডি = দ্য অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন এন্ড ডেভেলপমেন্ট] দেশগুলোর জন্য একটা স্টাডি করা হয়েছিলো দুহাজার নয়ে। উচ্চআয়ের দেশগুলোর ভেতরে ব্রডব্যান্ড পেনিট্রেশন আর তার জিডিপির একটা চমত্কার কোরিলেশন পাওয়া গেল গবেষণার গভীরে যেতেই। দেখা গেল টপ টায়ার ব্রডব্যান্ড পেনিট্রেশনের দেশগুলো নুন্যতম দুই শতাংশ জিডিপির গ্রোথ দেখাচ্ছে ওইসিডির অন্য দেশগুলো থেকে। আবার ব্রডব্যান্ড পেনিট্রেশনের প্রবৃদ্ধি বিভিন্ন দেশের অন্যান্য ইনডিকেটরের উপর নির্ভর করলেও বেস্ট কেস সিনারিওতে এটা ১.৫ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে অনেক দেশে। সব গবেষণা কিন্তু কাঠখোট্টা নয়। ব্রডব্যান্ড পেনিট্রেশন আর জিডিপির সম্পর্কটা কিছুটা মুরগী আর ডিমের মতো। ব্রডব্যান্ড পেনিট্রেশন বাড়লে জিডিপি বাড়বে এটা যেমন সত্যি, আবার জিডিপি বাড়লে মানুষের ব্রডব্যান্ড কেনার সামর্থ্য বাড়বে সেটাও আরেক সত্যি। তারমানে এটা একটা সাইকেল – বাড়তে থাকবে দুটোই – শৈনে, শৈনে! মানে যতো তাড়াতাড়ি পেনিট্রেশন ততো তাড়াতাড়ি উন্নতি। চার নম্বর স্লাইডটা দেখলে আন্দাজ পাবেন ভালো।

কাজ করি এই বিগ ডাটা নিয়ে। নিশ্চিতভাবে আমার ডাটায় যে প্রমান রয়েছে সেখানে ব্রডব্যান্ডের পেনিট্রেশন বাংলাদেশের বর্তমান প্রবৃদ্ধিকে ছাড়িয়ে নিয়ে যাবে সামনের বছর। ধারণা করছি সেটা হবে দু শতাংশের কাছাকাছি। পাল্টাচ্ছে বাংলাদেশ, সাধারণের হিসেবের বাইরে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ঠেকায় কে আমাদের ‘সেভেন পার্সেন্ট ক্লাবে’ ঢুকতে? তবে সেখানে কিছু কাজ রয়েছে বাকি। আর সেই অংশটা চতুর্থ চ্যাপ্টারে।

গল্পটা শেষ করতে চাইছিলাম এখানেই। তবে এই তিন ক্যাটাগরির গল্পটা না দিলে অসম্পূর্ণ থেকে যাবে জিনিসটা। তিন ক্যাটাগরির এমপ্লয়মেন্ট টার্গেট কিন্তু ভিন্ন। অদক্ষ, দক্ষ আর অতিমাত্রায় দক্ষ মানুষগুলোর জন্য ব্রডব্যান্ড নিয়ে আসছে কয়েক ধরনের প্যাকেজ। ব্রডব্যান্ড ছড়িয়ে দেবার চাকুরী নিয়ে যারা আসছেন তাদের মধ্যে সিভিল কনস্ট্রাকশন, দিনমজুর, লো-টেক ফাইবার স্প্লাইসার থেকে শুরু করে মোবাইল অপারেটরের ইন্টেলিজেন্ট নেটওয়ার্কের কমপ্লেক্স বিলিংয়ের মতো কাজে অতিমাত্রায় দক্ষ মানুষও লাগছে এখানে। ইনডাইরেক্ট বা ইন্ডিউসড চাকুরিতে যারা ইন্টারনেটের সুবিধা নিয়ে সারা বিশ্বে ব্যবস্যা করছেন – তারা পড়ছেন। কোম্পানি খোলা হচ্ছে প্রতিমিনিটে – চাকুরী তৈরী হচ্ছে তার থেকে দ্রুত গতিতে।

ইন্টারনেট কোম্পানীগুলোকে ভালোবাসে সব দেশই। ওরা যুক্ত করছে বিলিয়ন ডলার ওই দেশের ইকোনমিতে। কর্মক্ষেত্র তৈরি করতে জুড়ি নেই ওদের। গুগলের কথায় আসি। দুহাজার দশে তাদের বাজারমূল্য ছিলো দুশো বিলিয়নের বেশি। পৃথিবী জুড়ে চাকরির ব্যবস্থা করেছে ত্রিশ হাজার লোকের। ফেসবুকের একই অবস্থা। ফিরে আসি চীনের সার্চ ইঞ্জিন 'বাইদু'কে নিয়ে। দুহাজার আটেই তাদের বাজার মূল্য ছিলো পনেরো বিলিয়নের বেশি। চাকরি দিয়েছে সাত হাজার লোকের। রেভিনিউ'র কথা বাদই দিলাম।

অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপারদের কথা না বললেই নয়। আমার পরিচিত তরুণ বন্ধুরা প্রায় স্ক্রীনশট পাঠাচ্ছেন তাদের দিনের আয় নিয়ে। কেউ মাসে পাচ্ছেন দুহাজার ডলার। কেউ সাতশো। এটাই বা কম কি? এটাই বা কে দেয়? সবই হচ্ছে কিন্তু এই ইন্টারনেটের জন্য। মানে যত বেশি ইন্টারনেট ছড়াবে, ততো টাকা আয় করবে পৃথিবীর সব প্রান্ত থেকে। আর সেকারণে, থমাস ফ্রীডম্যানের গল্প 'ওয়ার্ল্ড ইজ ফ্ল্যাট' দুনিয়াকে একাকার করে দিয়েছে। যেতে হয়তোবা লাগে ভিসা, চাকরি - বেতন, ফ্রীল্যান্সিংয়ের কাছে দুনিয়া পুরো খোলা। অ্যাপ কোম্পানীগুলোর বেচাকেনার হিসেব হয়তোবা রাখছেন বড়টার [হোয়াট'সআপ তো বিক্রি হয় আমাদের বাজেটের বেশি দাম], মাঝারী আর ছোট ছোট কোম্পানিগুলো যে কতো রেভিনিউ কামাচ্ছে সেটা তো আমরা জানি না।

রেগুলেটরের কাজের বড় অংশ হচ্ছে নতুন কাজের ক্ষেত্র তৈরী করা আর সেই ব্যবস্যাকে টিকিয়ে রাখার জন্য তার টারশিয়ারী লাইফলাইন মানে সরকারী অন্য বিভাগ থেকে ঠিক মতো সাহায্য পাচ্ছে কিনা সেটা মনিটর করা। ব্যবস্যা একেবারেই না করতে পারলে তার জন্য এক্সিট রুট বলা থাকে তার লাইসেন্সে। উন্নত বিশ্বে রেগুলেটর অথবা ফাসিলিটেটর সাধারণত: থাকে অদৃশ্য রোলে। মার্কেট ঠিকমতো না চললেই ও দৃশ্যমান হয় – সহযোগিতার হাত নিয়ে। লাইসেন্স ক্যানসেলেশন অনেক পরের কথা। আবার নিয়মের ব্যত্যয় ঘটলে কোটি টাকা ফাইন। কোম্পানি বন্ধ হয়না কখনো। দোষ করেছে কোম্পানি, গ্রাহকেরা নয়। আর – গ্রাহক স্বার্থরক্ষায় আছে অনেকগুলো সরকারী এজেন্সি!

ব্রডব্যান্ড দিয়ে কার্যক্ষেত্র তৈরীর ক্ষেত্রে স্পিলওভার মানে নেটওয়ার্ক ইফেক্টে যে কাজগুলো আসে সেগুলো অতিমাত্রার দক্ষ মানুষদের জন্য ধরা হয়। এধরনের এমপ্লয়মেন্ট এক দেশ থেকে আরেক দেশে কম বেশি হয়। স্বাস্থ্যসেবা আর শিক্ষা এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ। বিলিয়ন ডলারের এই দুই সেবা খাত বাড়ছেই তো বাড়ছে ব্রডব্যান্ডের মাল্টিপ্লায়ার হিসেবে। এছাড়া অর্থব্যবস্থা আর পুঁজি বিনিয়োগ পুরোটাই টিকে আছে ভালো সংযোগের উপর – যারা কর্মসংস্থান করছেন কোটি লোকের। ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের আজ কি ঘটছে সেটার খোঁজ নিয়েছেন কখনো? ‘ব্রডব্যান্ড মাল্টিপ্লায়ার ইফেক্ট’ বা ‘এমপ্লয়মেন্ট মাল্টিপ্লায়ার’ নিয়ে গুগল করলে মাথা খারাপ হবে সবার। বলুনতো, কোথায় আছি আমরা?

Last updated

Was this helpful?